বর্তমান সময়ে করোনা মহামারী আমাদের ভিতরে এক প্রকার আতঙ্ক ছড়িয়ে গেছে। কারও সামান্য জ্বর হলেও আমরা ভয় পেয়ে যাই যে এটা করোনার উপসর্গ নাতো?! বর্তমানে করোনার সাথে যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গু জ্বর। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের মানুষজন অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এখন জ্বর হলে হয় সিজনাল, অথবা করোনা, অথবা ডেঙ্গু। কিন্তু কিভাবে বুঝা যাবে আসলে কোন রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দিয়েছে এই জ্বর?
করোনার উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হালকা জ্বর। এর সাথে রয়েছে ফ্লু জাতীয় ঠান্ডা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাচি-কাশি, অনেক ক্ষেত্রে চোখ দিয়ে পানি পড়ে চোখ লাল হয়ে যায়। মাথাব্যাথা সহ সারা শরীরে ব্যাথা হয়। অনেকের চোখ উঠে। করোনা সংক্রমনের কয়েক দিন পর স্বাদ-ঘ্রাণ চলে যায় সাধারণত। যদি কারও সংক্রমণ এর মাত্রা বেশি হয় সেক্ষেত্রে ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর বেশি জ্বর ও হতে পারে। দীর্ঘসময় অসুস্থতায় অনেক ক্ষেত্রে ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে। অনেকের তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়, অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় শরীরে।
কারও যদি উপরের উপসর্গগুলো দেখা দেয় তাহলে যত শীঘ্র সম্ভব করোনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। করোনা পজিটিভ হলে সবার থেকে আলাদা থাকতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন খাবার যেগুলো ইমিউনিটিকে শক্তিশালী করে সেগুলো খেতে হবে। অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ এর নিচে গেলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন।
অপরদিকে ডেঙ্গু হলে শুরু থেকে তীব্র জ্বর থাকে, শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসে। মাথাব্যাথা হয়, শরীর ব্যাথা হয়। রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যায়। এই উপসর্গগুলো করোনার সাথে মিলে যায় অনেকটাই। এসব ক্ষেত্রে রোগীর করোনা এবং ডেঙ্গু উভয় পরীক্ষাই করতে হবে। ফলাফল অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনা ও ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর করোনা ও ডেঙ্গু উভয়ই হতে পারে। সেক্ষেত্রে বেশ যত্নসহকারে রোগীর চিকিৎসা করতে হবে।
করোনা হলে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সুতরাং এসময় ডাক্তার ওষুধ দেন যেটা রক্তকে পাতলা করে। আবার ডেঙ্গু হলে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে রক্ত পাতলা হলে ওষুধ খেয়ে এর প্রভাব ভয়ানক হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
করোনা ও ডেঙ্গুর পার্থক্য করার জন্য মূলত জ্বরের ধরণটাই বেশ সহায়ক। যেখানে ডেঙ্গু হলে কাঁপিয়ে জ্বর আসে, সেখানে করোনায় ফ্লু জাতীয় ঠান্ডা জ্বর আসে। এছাড়াও করোনা হলে স্বাদ ঘ্রাণ চলে যায় যা ডেঙ্গু হলেও থাকে। আমাদের সবরকম রোগ থেকেই সাবধান থাকতে হবে। বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে এবং মশারী টাঙিয়ে শুতে হবে। এছাড়া বাইরে গেলে মাস্ক পড়ে এবং বাইরে থেকে এসে হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। এছাড়া বাইরে থাকাকালীন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেয়ে আমাদের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে হবে।
0 Comments